বাংলাদেশে চলমান শিক্ষার্থী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে জাপানের কিয়ুশু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ও পরিবারের পক্ষ থেকে বিবতিৃ
আমরা সবাই জানি যে গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন করছে।ইতিপূর্বেও এই বিষয় নিয়ে আন্দোলন হয়েছে কিন্তু কোন সমাধান আসেনি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের মলূ বিষয় ছিল যৌক্তিক সংস্কার, কোটা বাতিল করা বা মক্তিু যুদ্ধ কোটা নিয়ে হেয় করা নয়। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন প্রতিনিধির পক্ষ থেকে এই যৌক্তিক আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দাবীকে গুরুত্ব না দিয়ে, আলোচনা না করে উস্কানীমলকূ বক্তব্য প্রদান করা হয়। যার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরী হয় এবং সেটা সুষ্ঠুভাবে আলোচনার মাধ্যমে প্রতিহত না করে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনকে দিয়ে প্রতিহত করতে বলায় পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়।
বিভিন্ন মিডিয়ায় ফটো ও ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায় ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালানো হয়। সরাসরি গুলি করে শিক্ষার্থী হত্যা করা হয়! যা স্বাধীন বাংলাদেশে কখনও কাম্য নয়।
এখন পর্যন্ত মতৃ ্যুর সঠিক সংখ্যা ও আমরা জানি না, তবে আমরা দেখছি সংখ্যাটা বাড়ছে! এই অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ডের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। নিহতদের পরিবারকে সান্তনা দেওয়ার মত কোন ভাষা নেই আমাদের। সেই সাথে হাজারো শিক্ষার্থী আহত হয়েছে, রাষ্ট্র ও ব্যক্তিগত সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, চলমান উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে দেশ ও জনগণ আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গতকাল রাত থেকে ইন্টারনেট এবং মোবাইল কমিউনিকেশন প্রায় বন্ধ বলা চলে, এইরকম ভয়াভহ পরিস্থিতির দ্রুত প্রতিকার চাই। আমরা প্রবাসীরা দেশের ছাত্র/ছাত্রী, জনগণের বর্তমান অবস্থা নিয়ে শঙ্কিত। আমাদের বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে বৈষম্য দরীকর ূ ণের আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। সেই বৈষম্য বারবার ফিরে আসুক তা আমরা চাই না। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ হিসেবে আমরা স্বীকৃত, এখানে গণতান্ত্রিক সরকারের ভূমিকা হল সবার মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া, সবার স্বার্থ বিবেচনা করে যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া।
এই আন্দোলনে সরকারের সে ভূমিকা দেখা যায়নি যার ফলে এতগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত মতৃ ্যু আমাদের দেখতে হলো। স্বাধীনতার অর্ধশতক পার করে এসে আমাদের এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে তা দঃখজনক ু ! বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বেশিরভাগ তরুণ প্রজন্ম, তাদের কথা আমাদের শুনতে হবে, তাদের সাথে আলোচনা করে, তাদের অংশগ্রহণে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, অপরাজনীতি ও দর্নী ু তি বন্ধ না করলে এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা না করলে ধীরে ধীরে তা জনরোষ এবং এই ধরনের আন্দোলনের জন্ম দিবে যার ফলাফল কারো জন্য শুভ নয়।
বর্তমান চলমান সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সরকারের কাছে অনরু োধ:
১। সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে যত দ্রুত সম্ভব বসে আলোচনা করে তাদের
যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া।
২। আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীদেরকে মামলা, আইন শঙ্খৃ লা বাহিনী, বা সরকার দলীয় কর্মী বাহিনী দিয়ে
হয়রানি না করা।
৩। যে সব শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে তার সঠিক এবং দ্রুত তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করা।
৪। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের শোক কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করা।
৫। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হিসেবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৬। ভবিষ্যতে যে কোন ভিন্নমতের প্রস্তাব আসলে তা শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের ব্যবস্থা করা।